সর্বশেষ আপডেট : ১০ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেট স্টেডিয়ামের দুঃখ ‘গ্রিন গ্যালারি’

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

২০১২, শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ চলছে। ঠিক তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক বর্তমান জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু পাল্লেকেলের ক্যান্ডি স্টেডিয়ামের ছবি তুলছিলেন। তার কাছ থেকেই তখন জেনেছিল এই মাঠের আদলেই হবে সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। মূল ক্যান্ডির স্টেডিয়ামটির মূল আকর্ষন ছিলো ‘গ্রীন গ্যালারি’। যেখানে কোনো চেয়ার নেই, সবুজ ঘাসে বসে দর্শকরা উপভোগ করেন খেলা। অবশেষে সিলেট স্টেডিয়ামেও সেই গ্রীন গ্যালারি তৈরি করা হয়। কিন্তু ক্যান্ডির মতো এই গ্রীন গ্যালারি সিলেট স্টেডিয়ামের গর্ব হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ এটি যে নামেই শুধু গ্রীন গ্যালারি। বছরের বড় একটা সময় জুড়ে সিলেটে বৃষ্টি হলে এখানে বসার কোনো অবস্থা থাকে না। আর যখন বৃষ্টি মৌওসুম চলে তখন ঘাস ধীরে ধীরে হয়ে যায় হলুদ বা বাদামি বর্ণের।

মূলত পরিকল্পনা, নকশাগত ত্রুটি ও আবহাওয়ার কারণেই এখানে গ্রীন গ্যালারি কখনোই সবুজ হয় না। সিলেট স্টেডিয়ামের একটি সূত্র্র জানায়, ‘আসলে এই গ্রীন গ্যালারি এখন এই স্টেডিয়ামের মাথাব্যথার কারণ বা বোঝা হয়ে উঠেছে। বছরের যে সময়টাতে বৃষ্টি হয় তখন এখানে ঘাস সবুজ হয়ে উঠলেও কাদা মাটি ও সাপের উপদ্রবে এটি ব্যবহার করা যায় না। আবার যখন বৃষ্টি থাকে না তখন ঘাস কাটলেই এর রঙ সবুজের পরিবর্তে বাদামি হয়ে যায়।’

গত সোমবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও গ্রীন গ্যালারি তার বাদামি রঙ নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সবশেষ বিপিএল’র দশম আসরে শ্রীলঙ্কার ওপেনার অভিষ্কা ফার্নান্দো চট্টগ্রামের হয়ে খেলতে আসেন সিলেটে। সেই সময় সবুজে ঘেরা এই স্টেডিয়াম দেখে দারুণ মুগ্ধ হন তিনি। তবে গ্রীন গ্যালারির দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়ে বলেন, ‘সবই সুন্দর দারুণ। কিন্তু গ্রীন গ্যালারিটা এমন হওয়ার কথা না। আমার মনে হয় এখানে পরিকল্পনা করে কিছু করা হয়নি।’ এটাও সত্যি যে, গ্যালারিটিকে সবুজ রাখতে শুষ্ক মৌসুমে যে পানির সরবরাহ রাখার কথা তা রাখার হয়নি। ঘরে পর্যান্ত পানির ব্যবস্থা নেই। এমনকি সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাঁচাতে নেই বড় কোনো বা ছায়ার ব্যবস্থাও। সবুজের নগরী সিলেট। সেখানে সঠিক পরিকল্পনা করা হলেও হয়তো গ্রীন গ্যালারিটি এই মাঠে দুঃখ না হয়ে গর্বই হতে পারতো। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে যে এটি সবুজ হয়নি তাই নয়। এমন উঁচু টিলা রাখা হয়েছে যেখান থেকে দর্শকদের পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঝুঁকি প্রবল।

২০১৪’র মার্চে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ হয় সিলেটে। তখন থেকেই এই গ্যালারি সবুজের পরিবর্তে পুরোটাই ধূসর বা বাদামি ঘাসহীন ন্যাড়া টিলা। অথচ এর নাম গ্রীন গ্যালারি অনেকটা হাস্যরসের মতোই শোনায়। যে নামে বিশ্বজোড়া সুনাম কুড়িয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, তা এই গ্যালারির কারণে কিছুটা নষ্টও হয়েছে। যে কোনো সিরিজের আগেই স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কেবল একটাই আশ্বাস- ‘ঘাস লাগানো হচ্ছে, উঠবে, উঠছে। তবে মূল জটিলতা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও বিসিবি’র মধ্যে সমন্বয়হীনতা। তবে বর্তমানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন একাধারে ক্রীড়ান্ত্রীও। তার অধিনেই আছে এনএসসি। এবার সিলেট স্টেডিয়াম ও এখানকার ক্রিকেট সংগঠকরা আশা করছেন এই গ্রীন গ্যালারির প্রতি নজর দেয়া হবে। কাটবে সমন্বয়হীনতা।

এ নিয়ে সিলেটের একটি ক্রিকেট সংগঠক বলেন, ‘এখানে গ্রীন গ্যালারি তৈরি সম্ভাবনা এমন কথাও বলা হয়। কিন্তু এটি সঠিক নয়। আন্তরিকতারও কমতি নেই সিলেট স্টেডিয়ামের দায়িত্বরত ব্যক্তি ও এখানকার ক্রিকেট সংগঠকদের। কিন্তু সমস্যা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অবহেলা। তবে এবার বিসিবি সভাপতি এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন। আশা করি দেশের ক্রিকেট মাঠগুলো পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হবে না। সিলেটের স্টেডিয়ামটির সমস্যাগুলো তার সহযোগিতা দূর করা সম্ভব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: